নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট কি, কিভাবে খুলতে হয় | নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে বিস্তারিত
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট কি, কিভাবে খুলতে হয় | নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট নিয়ে বিস্তারিত: আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের আজকের আর্টিকেলের আলোচনা করবে। আজ আমরা নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট ওপেনিং সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো। যে বা যারা নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট সম্পর্কে জানেন না,
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট বলতে কী বোঝায় এবং এটি কিভাবে খুলতে হয় সেই সাথে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা কি -তাদেরকে বলব আজকের এই আর্টিকেলটি স্কিপ না করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আমাদের দেওয়া নিয়মাবলী অনুসরণ করে আপনি খুব সহজে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারবেন এবং ক্রিয়েট করে ফেলতে পারবেন নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?
দেখুন এটা আমরা সবাই জানি নগদ হচ্ছে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের ডিজিটাল অর্থনৈতিক সেবা। আর সেবা হিসেবে আমরা নগদের কাছ থেকে পেয়ে থাকি বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা। নগদ একাউন্ট মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে পার্সোনাল একাউন্ট আরেকটি হচ্ছে নগদ উদ্যোক্তা বা এজেন্ট একাউন্ট এবং অপরটি হচ্ছে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট। অর্থাৎ নগদ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট হচ্ছে নগদের একটি অংশ, যা গ্রাহকদের বা ব্যবসায়ীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট ওপেনিং
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা সকল গ্রাহক ভোগ করতে পারবে অর্থাৎ সেটা যে কেউ। আর এটি এতটাই সহজ যে একজন মানুষ ঘরে বসে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট ওপেন করতে পারবে। তাই এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট ওপেনিং এর আরো বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কে। সত্যি বলতে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে নিজে নিজেই খুব সহজে ঘরে বসে খুলে ফেলতে পারবেন।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
এটা নিশ্চয়ই আপনি জেনে থাকবেন যেকোনো অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু ইনফরমেশন এর প্রয়োজন পড়ে। আর আপনি যেহেতু বাইরের কোন কোম্পানির প্রদান করার সেবা গ্রহণ করতে নিজস্ব একটা অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করবেন তাই অবশ্যই আপনার সম্পর্কে কিছু ইনফরমেশন তাদেরকে দিতেই হবে।
সুতরাং নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজন পড়বে বেশ কিছু ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রের। কিন্তু সেগুলো কি? আসুন এ পর্যায়ে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- ✓ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট
- ✓একটি মোবাইল নাম্বার
- ✓দোকানের সিল বা লাইসেন্স
- ✓ দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট এর প্রয়োজনীয়তা
অনেকেই এটা সম্পর্কে অবগত নন যে, কেন বা কি কারনে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলবেন? তাদের উদ্দেশ্যে এই পয়েন্ট। দেখুন আপনার যদি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে থাকে, এবং আপনার পণ্যগুলো যদি মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় থাকে অর্থাৎ অডিয়েন্স বা ক্রেতারা যদি মোবাইলে পূর্ণগুলোর মূল্য পরিশোধ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে, তাহলে আপনার জন্য মার্চেন্ট একাউন্ট থাকাটা খুবই জরুরী।
কেননা এই অ্যাকাউন্ট যদি থেকে থাকে তাহলে গ্রাহকরা খুব সহজে পেমেন্ট করতে পারবে এবং সম্পূর্ণ ফ্রিতে সেই পেমেন্ট প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। আর বর্তমানে মানুষ অনেক বেশি অ্যাডভান্স সে সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর। এজন্য মানিব্যাগে টাকা রাখার পাশাপাশি মোবাইলে টাকা রাখাটা অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে গ্রাহকরা। সুতরাং স্মার্ট বিজনেসের জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি মার্জেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে।
নগদ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
এবার আসুন জেনে নেই নগদ মার্জেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে আপনাকে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে যেতে হবে এবং স্টেপ বাই স্টেপ কি কি করতে হবে।
প্রথমত: নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে নিজস্ব পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে নগদে। এজন্য আপনার হাতে থাকা ফোন থেকে শুরুতে ভিজিট করতে হবে প্লে স্টোরে এবং সেখান থেকে ডাউনলোড করতে হবে নগদ মোবাইল অ্যাপস।
✓নগদ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম – এখানে
দ্বিতীয়ত: পার্সোনাল একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন হলে মাঝখানে অন্যান্য ডকুমেন্ট শিরোনামের একটি পেজ সাজেস্ট করা হবে আপনাকে। সেখানে থাকবে দুটি অপশন।
১. সাধারণ অ্যাকাউন্ট
২. মার্চেন্ট একাউন্ট
তাই এ পর্যায়ে আপনাকে ক্লিক করতে হবে মার্চেন্ট একাউন্ট ক্রিয়েট করার জন্য।
তৃতীয়তঃ অপশনে যাওয়ার পরবর্তীতে আপনার চলতি বছরের হালনাগাদকৃত ট্রেড লাইসেন্স অথবা অন্যান্য কাগজপত্রের পরিষ্কার ছবি তুলে আপলোড করতে হবে।
মূলত নগদ পার্সোনাল একাউন্ট বা সাধারণ অ্যাকাউন্ট, নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আপনাকে যে যে নিয়ম অনুসরণ করতে হবে ঠিক একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে নগদ মার্জেন্ট একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে। শুধু আপনাকে আলাদা কিছু সিলেক্ট করতে হবে যখন আপনার সামনে সাজেস্ট করা হবে আপনি কোন একাউন্ট ক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন অর্থাৎ পার্সোনাল একাউন্ট, উদ্যোক্ত অ্যাকাউন্ট নাকি মার্চেন্ট একাউন্ট। ব্যাস এই প্রক্রিয়ায় যদি আপনি নগদ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার পার্সোনাল একাউন্ট এর মত আপনার নিজস্ব নগদ মার্জেন্ট একাউন্টও হয়ে যাবে।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা
এ পর্যায়ে আমরা জানবো নগদ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের সুবিধা সম্পর্কে। আপনার যদি একটি মার্চেন্ট একাউন্ট থাকে তাহলে আপনি নগদের কাছ থেকে কি কি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন? আসুন এ পর্যায়ে সেসব সম্পর্কে জেনে নেই।
- নগদ তাদের গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্টের সুবিধা দিয়ে থাকে আর তার মধ্যে মার্চেন্ট একাউন্ট অন্যতম। কেননা নগদ মার্চেন্ট একাউন্টে গ্রাহকদেরকে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে আর তার মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। কেননা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ট একাউন্ট থাকার কারণে গ্রাহকদের সাথে লেনদেন অনেক সহজ হয় এতে করে ব্যবসা এবং গ্রাহক দুটিকেই খুব ভালোভাবে কন্ট্রোল করা যায়।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট সুবিধা থাকার কারণে ক্রেতাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পায় সে সাথে স্মার্ট ব্যবস্থাপনা ক্রেতাদেরকে অনেক বেশি আকৃষ্ট করে।
- হাসপাতাল বা অন্যান্য কাজের জন্য বড় বড় লেনদেনের প্রয়োজন পড়ে অনেক সময়। তাছাড়াও কখনো কখনো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এক স্থান থেকে গিয়ে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর সম্ভব হয় না। আর এই নগদ মার্চেন্ট একাউন্টের কারণে মানুষ অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে পারে। এর ফলে সঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন হয়, সময় বেঁচে যায় এবং ভোগান্তি কম হয়।
এক কথায় নগদ মার্জেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে যেমন একজন কাস্টমার বা গ্রাহক সুবিধা ভোগ করে ঠিক একইভাবে সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীরাও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট বন্ধ করার পদ্ধতি
দেখুন আপনি যদি চান তাহলে নগদে আপনি যে কোন অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করার পরেও সেটা বন্ধ করে দিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে নগদ একাউন্ট বন্ধ করার পদ্ধতি জানতে হবে। তাই যদি কখনো আপনার মনে হয় নগদ একাউন্ট বন্ধ করবেন সে ক্ষেত্রে আপনি প্রথমত ১৬১৬৭ নাম্বারে কল করুন।
পরবর্তীতে নির্দিষ্ট কারণ প্রদান করে একাউন্ট বন্ধ করার জন্য আবেদন ফরম প্রদান করুন। ব্যাস এটুকুই। নগদ কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন পেলে তারা তাদের দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটা সম্পন্ন করে দেবে। শুধুমাত্র অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে তাদেরকে আপনার বিষয়টা জানানো।
পরিশেষে: তো প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি আমাদের এই কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনি নগদ মার্জেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন এবং খুব সহজে নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে নিরাপদে লেনদেন করতে পারবেন।
তো যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে বা নগদ মার্জেন্ট একাউন্ট ক্রিয়েট করার ক্ষেত্রে কোন ঝামেলায় পড়েন তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানান। আর যেকোনো পোস্ট সবার আগে পেতে আমাদের ফলো করুন বা সাবস্ক্রাইব বেল আইকনটি ক্লিক করে দিন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো দেখুন:
- চেক লেখার নিয়ম এবং নির্ভুলভাবে সঠিক প্রক্রিয়া ব্যাংকের চেক লিখুন
- পার্সোনাল ব্লগ কি | পার্সোনাল ব্লগের মাধ্যমে উপার্জন করার উপায়
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কি | কিভাবে শুরু করবেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা
- কপিরাইটিং কি – কিভাবে কপি রাইটিং করতে হয় | জেনে নিন কপিরাইটিং ও কনটেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পার্থক্য
- নিশ কি – নিশ কত প্রকার ও কি কি | তাড়াতাড়ি ইনকাম করার জন্য ১১টি জনপ্রিয় ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া