অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায় (বেস্ট টিপস ও ট্রিক্স)

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায় (বেস্ট টিপস ও ট্রিক্স): অনলাইন প্লাটফর্মে নিজের স্কিল প্রয়োগ করে মোটা টাকা ইনকামের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটা কৌশল, যার মাধ্যমে যেকেউ নিজের একটা পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারে। বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কদর এতটাই বেড়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে এর কদর এতটাই বেড়ে চলেছে, যা কল্পনা করা অসম্ভব।

আপনারা যারা অনলাইন আয় সম্পর্কে টুকিটাকি বিষয় জানেন, তারা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং শব্দটির সাথে পরিচিত। তবে আমরা আজকের আর্টিকেলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানব। তাই আপনারা যারা মার্কেটিং কে নিজেদের ক্যারিয়ার হিসেবে শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য অ্যাফিলেট মার্কেটিং সবচেয়ে উপযুক্ত।

তাহলে আসুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই– এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ কি? আপনি কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন এবং এফিলেট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায় কি? আজকের এই ছোট্ট আলোচনার মাধ্যমে আমরা আপনাদের কিছু সেরা কলা কৌশল জানাবো, যার মাধ্যমে আপনি নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন অ্যাসিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

মার্কেটিং শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। বলা যায় এই শব্দটির সাথে প্রচার, প্রমোশন এবং কেনা বেচার শব্দগুলো সম্পৃক্ত। আর ঠিক, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটা মাধ্যম বা উপায়, যার দ্বারা অনলাইন কোম্পানির ডিজিটাল প্রোডাক্ট, অনলাইন স্টোর এর ফিজিক্যাল প্রডাক্ট বা অনলাইনে কিনতে পাওয়া যাবে এমন যেকোনো জিনিস, নিজের ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা একটা youtube চ্যানেলে অ্যাফিলিয়েট এর মাধ্যমে প্রমট করাই হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে মূলত কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট এর রিচ বাড়ানো হয়। আরেকটু সহজ ভাবে বললে বলা যায়, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অর্থ হচ্ছে, কোন পণ্য বা সেবা নিজের একটা ইউনিক লিংক ব্যবহার করে প্রচারের মাধ্যমে বিক্রয় করা। আসুন এবার একটা উদাহরণের মাধ্যমে বোঝানো যাক, মনে করেন আপনি অ্যামাজন মার্কেটপ্লেস থেকে একটা প্রোডাক্ট সিলেক্ট করেছেন এবং সেটা আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেল অথবা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রচার করছেন।

বে এক্ষেত্রে শুরুতে আপনাকে অ্যামাজনের হয়ে এফিলিট মার্কেটিং করার পূর্বে একটা আবেদন করতে হবে। আর আপনার আবেদন যখন গ্রহণযোগ্য হবে তখন আপনি যে কোন পণ্য সিলেকশন করতে পারবেন এবং সেগুলো প্রমোট করে বিক্রি করতে পারবেন। পরবর্তীতে সেই কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য আপনি কিছু কমিশন আয় করতে পারবেন। আর আফিলিয়েট মার্কেটিংটা মূলত এমন।

এক কথায় এই মার্কেটিং এর মাধ্যমে, কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয় এবং সেই কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য কোম্পানি তাকে কিছু কমিশন প্রদান করে। কমিশন গ্রহণ করাই হচ্ছে এফিলেট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কি কি প্রয়োজন?

মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। এখন কথা হচ্ছে আমি যদি এফিলেট মার্কেটিং করতে চাই তাহলে আমাকে কি কি যোগান দিতে হবে? সত্যি বলতে আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ভালো মতন টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে বেশ কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। অর্থাৎ কিছু প্রসিডিউর মেনে অ্যাফিলেট মার্কেটিং শুরু করতে হবে। আর এর জন্য আপনার প্রয়োজন পড়বে

  • ইচ্ছা শক্তির
  • ইউনিক টেকনিক
  • একটি পোর্টফোলিও
  • মার্কেটিং সম্পর্কে বেসিক নলেজ
  • ধৈর্য ও অধ্যবসায়
  • রিসার্চ করার মন-মানসিকতা।
  • তবে হ্যাঁ, যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ 

একদমই নতুন তাদের জন্য আরও কিছু টিপস রয়েছে। মানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে প্রতিটি স্টেপ পয়সা ক্রমে পালন করতে হবে। সেসব হলো: 

  • সঠিক এফফিলিয়েট প্রোডাক্ট নির্বাচন করা
  • প্রোডাক্ট এর ধরন অনুযায়ী নিশ গঠন করা
  • অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটের জন্য যথাযথ ডোমেইন নির্বাচন করা
  • থিম এবং প্লাগিন সেটআপ করা
  • ভালো মানের কনটেন্ট পাবলিশ করা
  • সঠিক ডাটা জানার জন্য এনালিটিক্স সেট করা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করে কিভাবে? 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত চারটি কৌশলে কাজ সম্পাদন করে। সেগুলো হচ্ছে:

১. এফিলিয়েট

২. সেলার

৩. নেটওয়ার্ক

৪. কনজুমার

অ্যাসিলিয়েট হচ্ছে যে ব্যক্তির প্রোডাক্ট প্রমোট করে। আর এখানে সেলার হচ্ছে সেই ব্যক্তির যিনি প্রোডাক্ট বিক্রি করছেন। নেটওয়ার্ক হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট সম্পর্ক তথ্য সমূহ যে নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে এবং কনজ্যুমার হলো যারা প্রোডাক্ট ক্রয় করে। মূলত এই চারটা মাধ্যমিকে সম্পাদন করে এফিলিয়েট মার্কেটিং তাদের নিজেদের কার্য সম্পন্ন করে। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর আয় কিসের উপর নির্ভর করে?

যদি কেউ মার্কেটিং নিয়ে আগাতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে সেনসিটিভ মাইন্ডের হতে হবে। কারণ এফিলিয়েট মার্কেটিং এর আয় মূলত নির্ভর করে সেই মার্কেটারের উপর। তবে এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে চারটি বিষয় অবগত করব যেগুলো এফিলেট মার্কেটিং থেকে আয় পুরোপুরি নির্ভর করে থাকে। যথা

  • আপনি কতটা দামী জিনিস বা প্রোডাক্টের মার্কেটিং করছেন
  • প্রত্যেক বিক্রেতা আপনাকে ঠিক কত টাকা দিচ্ছে
  • আপনি কতটি প্রোডাক্ট অ্যাফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে বিক্রয় করছেন
  • এবং যেই প্রোডাক্ট আপনি মার্কেটিং করছেন তার চাহিদা মার্কেটপ্লেসে বেশি নাকি কম। 

সত্যি বলতে সামান্য কঠিন পরিশ্রম করে আপনি একবার এই অনলাইন ব্যবসা ধরে ফেললে এত টাকা আয় করতে পারবেন যে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। কারণ এটা সম্পূর্ণ একটা অনলাইন ব্যবসা। আর অনলাইনে যদি কোন কিছু পরিচিতি পায় তাহলে সেটার ডিমান্ড দিনের পর দিন না কমে বরং বাড়তে থাকে।।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করা যায়? সেরা কলাকৌশল

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে পারসেল, পার ক্লিক এবং পার লিড এই তিন মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। একজন কনজ্যুমার যখন অ্যাফিলিয়েট লিংকে গিয়ে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করেন তখন একজন এফিলিয়েট কি হিসেবে আয় করেন এটি একটি বহুল আলোচিত বিষয়। তাই সেখানে ফার্ম সাবমিশন ক্লিক পারচেজ ইত্যাদি এক্টিভিটি থেকে একজন অ্যাফিলিয়েট আয় করতে পারে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল হচ্ছে পার সেল। এই প্রেমেন্ট মডেলে একজন অ্যাফিলিয়েট দ্বারা হওয়া সিল এর উপর ভিত্তি করে কমিশন দেওয়া হয়ে থাকে। অপরদিকে পার ক্লিক হচ্ছে আরেকটি মডেলের ফিচার।

এক্ষেত্রে কমিশন পেতে সেল হওয়া লাগে না বরং কোন কনজিউমার অ্যাফিলেস লিংকে ক্লিক করলেই এফিলিয়েট কমিশন দিয়ে দেয়। বাকিটা হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটের দ্বারা জেনারেট করা প্রতি লিড এর জন্য পেমেন্ট এর মাধ্যম। সুতরাং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে এই তিনটি মডেল এ যে কেউ উপার্জন করতে পারবে। 

তাই আপনি যদি খুব দ্রুত এফিলিয়েট মার্কেটিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাহলে প্রথমত আপনাকে যা করতে হবে সেগুলো হলো:

  • হাই কোয়ালিটি প্রফিটেবল নিস সিলেক্ট করা
  • প্রয়োজনীয় একটি পণ্য বা সেবা নির্বাচন করা
  • ট্রাফিক সোর্স প্লাটফর্ম নির্বাচন করা
  • পন্যের মান ও ব্র্যান্ডিং তৈরি করা
  • পণ্য বিক্রি করার জন্য একাধিক স্থান অর্থাৎ মাধ্যম নির্বাচন করা।

লাভজনক এবং বিখ্যাত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম সমূহের নাম

  • এ পর্যায়ে আমরা জানব এমন কয়েকটি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের নাম সম্পর্কে, যেগুলো অত্যন্ত লাভজনক এবং বিখ্যাত প্লাটফর্ম।  যথা:1. Cheapflights
  • 2. Amazon Associates
  • 3. Bluehost
  • 4. HubSpot
  • 5. Elementor
  • 6. AWeber
  • 7. Sendinblue
  • 8. GetResponse
  • 9. Fiverr
  • 10. Pabbly
  • 11. Unbounce
  • 12. Contant Contact
  • 13. aliexpress
  • 14. Systeme.io
  • 15. Typeform
  • 16. ConvertKit
  • 17. Outgrow
  • 18. Thinkific
  • 19. Kajabi
  • 20. Teachable
  • 21. iSpring
  • 22. Shopify
  • 23.Leadpages
  • 24. Wix
  • 25.Crowdbotics
  • 26. WP Engine
  • 27. Kinsta
  • 28. Hostgator
  • 29. GreenGeeks
  • 30. Target
  • 31. Hammacher Schlemmer
  • 32. Spocket
  • 33. eBay Partner Network
  • 34. Ulta
  • 35. Bdshop
  • 36. Sephora
  • 37. FragranceNet
  • 38. BH Cosmetics
  • 39. Boatbookings
  • 40. Momondo
  • 41. Sandals Resorts
  • 42. Acorns
  • 43. Sage Financials
  • 44. Daraz
  • 45. Shopz

তবে এর বাইরেও বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যারা তাদের পণ্য বিক্রি করার জন্য ভালো কমিশন দিয়ে থাকে। তাদের সম্পর্কে জানতে আপনি সোজা গুগলে গিয়ে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর বিষয়ে সার্চ করে জয়েন হতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবেন?

আপনি যদি একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান তাহলে সেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন কিভাবে, এ প্রশ্নটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি মূলত বেশ কয়েকটি মাধ্যমকে কেন্দ্র করে আসলে এটা মার্কেটিং করতে পারবেন। সেগুলো হচ্ছে

  • ব্লগিং
  • Youtube
  • ইমেইল এফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • কুপন সাইট
  • লিংক শেয়ার প্রভৃতি।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

ইতিমধ্যে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে আয় করা যাবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি এটাও জেনে রাখাটা প্রয়োজন। তাহলে আসুন এবার জেনে নেই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো কি কি?

  • প্যাসিভ ইনকামের সুবিধা
  • ফ্লেক্সিবিলিটি
  • এবং কমঝুঁকি

মূলত এই তিনটি সুবিধা মানুষকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করায়। তো ভিউয়ারস, আমাদের আজকের আলোচনা এপর্যন্তই। যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে কমেন্ট করে জানান। সেই সাথে আপনি যদি আমাদের ওয়েবসাইটে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত যে কোন পোস্ট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Comment