ব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস | জেনে নিন ব্যাংক জব সম্ভাবনা ও সুযোগ 2023
ব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস | জেনে নিন ব্যাংক জব সম্ভাবনা ও সুযোগ: আসসালামু আলাইকুম পাঠক বন্ধুরা, সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের আজকের আর্টিকেলে। দেখুন এটা আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং সেক্টর বর্তমানে হতে পারে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য একটি আদর্শ প্লাটফর্ম। আর সার্বিক বিবেচনায় ব্যাংকিং পেশা একটি চমৎকার পেশা হিসেবে পরিগণিত।
স্বচ্ছ ও দ্রুততর নিয়োগ প্রক্রিয়া, সামাজিক মর্যাদা, স্মার্ট ক্যারিয়ার, বৈধ উপায়ে আর্থিক সচ্ছলতার সুযোগসহ প্রভৃতি কারণে বর্তমান যুবসমাজের কাছে ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করার আগ্রহ দিনের পর দিন বাড়তেই আছে। আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে জানব, ব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস সম্পর্কে। তাহলে আসুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি আমাদের আজকের আলোচনা পর্ব।
ব্যাংক ক্যারিয়ার
বর্তমান বাংলাদেশে, ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাংকিং খাত হচ্ছে বিশাল সম্ভাবনার নাম। সরকারি বেসরকারি প্রায় উভয় খাতে আজকাল অনেকগুলো ব্যাংক বাংলাদেশের যুব প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে ও তাদের সাথে কাজ করার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। যাতে করে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নতির হার বৃদ্ধি পায় সেই সাথে দেশের অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ও উন্নয়ন ঘটে।
আর এই সেক্টরটি তুলনামূলক বড় হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রতি বছর দক্ষ কর্মকর্তারা যোগদান করে। আর যোগদানের কারণ হচ্ছে দক্ষ কর্মকর্তার প্রচুর চাহিদা। তাই যদি কেউ সঠিক প্রস্তুতি আর নিয়মিত পড়াশোনা করে তাহলে খুব সহজেই ব্যাংকিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এ পর্যায়ে আমরা আর-আলোচনা করব:
- ব্যাংক ক্যারিয়ার টিপস
- ব্যাংকিং পেশায় তরুণদের ক্যারিয়ার
- ব্যাংক চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া
- ব্যাংক চাকরির পরীক্ষার পদ্ধতি ও প্রস্তুতি
- ব্যাংক চাকরির যোগ্যতা
- ব্যাংক চাকরির সম্ভাবনা ও সুযোগ
- ব্যাংক চাকরির প্রিলিমিনারি প্রশ্নের বিষয়বস্তু ও মান বন্টন
- ব্যাংক চাকরির লিখিত পরীক্ষা মানবন্টন এবং প্রস্তুতি
- আনুষঙ্গিক বিষয়সমূহ ও ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়।
ব্যাংকিং পেশায় তরুণদের ক্যারিয়ার
রিপোর্ট অনুযায়ী বসবাসরত ১৬ কোটি জনসংখ্যার অধ্যুষিত জনসংখ্যাই বেকার সমস্যায় কবলিত। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় 38 ভাগ মানুষ বেকার। যে সমস্যাটি আমাদের এই দেশে প্রকট আকার ধারণ করেছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী সদ্য অনুমোদন পাওয়া নয়টি ব্যাংক সহ বাংলাদেশে এখন মোট ব্যাংকের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ তে।
যার মধ্যে সরকারি ব্যাংকের সংখ্যা হচ্ছে ০৪ টি, বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা ৫৯টি। পাশাপাশি বিশেষায়িত ব্যাংকের সংখ্যা ০৪টি, বিদেশী ব্যাংকের সংখ্যা ০৯ টি। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন অসংখ্য ব্যাংক শাখা। যেগুলোর গড় হিসাব করলে পাওয়া যায় প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। যেহেতু এই সেক্টরটি তুলনামূলক বড় এখানে সারা বছর দক্ষ কর্মকর্তাদের খোঁজা হয় তাই ব্যাংকিং পেশায় তরুণদের ক্যারিয়ার অনেক বেশি উজ্জ্বল হতে পারে।
ব্যাংক চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া
বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হল বাংলাদেশ ব্যাংক। আর সরকারি ব্যাংক এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আলাদা আলাদা প্রক্রিয়া য় নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়াতে যখন সকল অনুসাদের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে তখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ছাত্রছাত্রীদেরকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।।
আর সরকারি ব্যাংকের চাকরির বিজ্ঞাপনের জন্য প্রধানত গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়। যেমন মনে করুন জাতীয় পত্রিকা থেকে শুরু করে চাকরির ওয়েবসাইট বা ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট। ব্যাংক চাকরির সোর্স সমূহ অসংখ্য। যেমন:
- bdjobs.com
- totthadi.com
- www.bdjobstoday.com
- www.bdjobs.com etc.
কিন্তু সাধারণত ব্যাংকিং সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোতে তিন পোস্টের সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে:
- সহকারী পরিচালক
- জেনারেল অফিসার
- ক্যাশ অফিসার
এছাড়াও কিছু কিছু পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। সেটা হতে পারে ইনফরমেশন টেকনোলজি, একাউন্টিং সহ প্রভৃতি শাখা। যেটাকে বলা হয় স্পেশাল রিক্রুটমেন্ট। অপরদিকে বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া আলাদা হয়ে থাকে।
আর বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে ব্যাংকগুলোর নীতিমালা। এদের কিছু ব্যাংক আছে যাদের নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেকটা একই রকম হয় আবার কখনো কখনো পার্থক্য থেকে থাকে, যারা নিজেদের মতো করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সাজিয়ে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে। তবে বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে মূলত নিয়োগ প্রক্রিয়া চারটি ক্যাটাগরিতে হয়। সেগুলো হলো:
- Tailored Recruitment,
- General Banking Recruitment,
- Management Trainee Officer (M.T.O) or Probationary Officer (P.O) Recruitment, Lateral Recruitment।
ব্যাংক চাকরির পরীক্ষার পদ্ধতি ও প্রস্তুতি
দেখুন আপনি যে চাকরি করতে চান না কেন অবশ্যই আপনাকে পরীক্ষা দিতে হবে, আর এজন্য আপনার পূর্ব প্রস্তুতি থাকাটা অনেক বেশি জরুরী। আর চাকরির ক্ষেত্রে মৌখিক এবং লিখিত দুই ধরনের পরীক্ষা হয়ে থাকে এটা সবারই জানা। তবে আমরা মনে করি আপনি চাকরি পাবেন কিনা তা বহুলাংশন নির্ভর করবে আপনার লিখিত পরীক্ষার উপর। কেননা এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা চ্যাপ্টার বা ধাপ।
সরকারি ব্যাংকগুলোতে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয় ২০০ নম্বরের মধ্যে। আর এই স্বল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা ভেদে দুই থেকে চারটি বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নের উত্তর, একটা ইংরেজি প্যাসেজ, দুইটি আবেদন পত্র দুইটি অনুবাদ এবং পাঁচ থেকে সাতটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে হয়। বেসরকারি ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে তবে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই। আর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ব্যাংক চাকরির ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় ফোকাস রাইটিং অর্থাৎ দুই থেকে চারটি যে বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয় সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
যেটাতে ভালো করতে হলে আপনার বাংলা এবং ইংরেজি রাইটিং স্কিল অনেক বেশি স্মার্ট ও হেল্পফুল হতে হবে। সেখানে আপনি খুব বেশি সময় পাবেন না তবে সেটা না পেলেও আপনাকে অবশ্যই অল্প লেখার মধ্যে সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করতে হবে। সে সাথে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে,
- বাক্যের শুদ্ধ গঠন
- বাক্যের বানান
- ব্যাকরণগত ইস্যু
- শব্দ চয়ন এর ক্ষেত্রে ইস্যু
এক কথায়, আপনি যে লেখাটি উপস্থাপন করবেন সেটা যেন শুনতেও দেখতে সুন্দর ও আধুনিক হয় এবং সর্বোপরি লেখাটি যাতে তথ্যবহুল হয়ে থাকে। আর তাই নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদনীয় পড়ার চেষ্টা করুন এবং অবসর সময়ে বিভিন্ন বই পড়ুন। কেননা বই পড়ার কোন বিকল্প নেই।
একজন মানুষ কোন বিষয়কে খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারে তখন যখন সে অতিরিক্ত বই পড়ে এবং সে সম্পর্কে ধারণা রাখে। সুতরাং আপনি যদি ব্যাংক চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে এবং সেটা সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষার খাতায় উপস্থাপনের ক্ষমতা রাখতে হবে। তবে হ্যাঁ পাঠক বন্ধুরা আপনারা যদি ফোকাস রাইটিং এর জন্য আমাদের সাজেস্ট করা এই টপিকগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আশা করা যায় রাইটিং স্কিলে ভালো করবেন। সেগুলো হলো:
- Cyber Security for Banking Sector,
- Initiatives are taken by the central bank during the Covid-19 pandemic,
- Money laundering and anti-money laundering initiatives
- Fiscal policy and monetary policy,
- Single-digit interest rate,
- Megaprojects run by the government,
- Foreign currency reserve,
- Economic zones and their impact,
- Poverty and development in Bangladesh,
- Women empowerment,
- Any recent global and local issue
ব্যাংক চাকরির যোগ্যতা
ব্যাংক চাকরির প্রয়োজনীয় বেশ কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন। যেমন ধরুন কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট সম্পন্ন হলে আপনি কোন ব্যাংকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তবে হ্যাঁ বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রি থাকলে বর্তমানে ব্যাংকে অসংখ্য পদে আপনি আবেদন করতে পারবেন চাকরির জন্য। ব্যাংক যোগ্যতার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কিছু উল্লেখ না থাকলেও যে কোন বিষয়ে পাশ করে ব্যাংকে চাকরির জন্য আবেদন করা যেতে পারে।
সুতরাং সাধারণত সব বিভাগের ডিগ্রিধারী ছাত্রছাত্রীরা সরকারি বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আবেদন করতে পারবে। তবে কিছু কিছু বেসরকারি ব্যাংকে এমটিও এবং পিও পদসহ আবেদনের জন্য কিছু বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। ব্যাংকে সাধারণ চাকরিতে আবেদনের বয়সের সময় সীমা সর্বনিম্ন ৩০ বছর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
ব্যাংক চাকরির সম্ভাবনা ও সুযোগ
ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাতে মুক্তবাজার অর্থনীতির এই সময়ে যোগের সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে ব্যাংকিং খাতের। আধুনিক ব্যাংকগুলো প্রযুক্তিগতভাবে হয়েছে আরো অনেক বেশি দক্ষ ও উন্নত সেই সাথে সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন। তাই বর্তমান তরুণ প্রজন্মের গ্রাজুয়েশনের পর আরো বেশি করে এই দিকে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার আগ্রহ বাড়ছে। এই পেশাতে এতটা আগ্রহ থাকার কারণ অধিক বেতন এবং ভালো সম্মান।
সেই সাথে আরও একটি কারণ রয়েছে সেটা হচ্ছে- ভবিষ্যতে বেশ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা। আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যাংক গুলোর কথা বললে প্রথমেই মাথায় আসবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম। যারা বেশ কিছু লেনদেন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। যেমন:
- বৈদেশিক মুদ্রার রক্ষণাবেক্ষণ করা
- কারেন্সি ইস্যু করা
- রাষ্ট্রের রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখা
- আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর নজরদারি করা সহ প্রভৃতি।
আর বর্তমানে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দশটি শাখা বা অফিস কার্যকর রয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় বাংলাদেশ ছাড়াও ৫৯টি তফসিলি ব্যাংক এবং পাঁচটি অনির্ধারিত ব্যাংক রয়েছে। তবে যাই হোক সব দিক বিবেচনায় আমাদের দেশে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাংকিং সেক্টর অনেক বেশি প্রশস্ত। আর তাই ব্যাংক চাকরির সম্ভাবনা ও সুযোগ অনেক সুযোগ প্রসারী।
ব্যাংক চাকরির প্রিলিমিনারি প্রশ্নের বিষয়বস্তু ও মানবন্টন
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্যাংক চাকরির সময় আপনি যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেবেন তার বিষয়বস্তু কি কি থাকবে এবং মানবন্টন ঠিক কিভাবে করা হবে। এ পর্যায়ে আমরা জানবো লিখিত ও প্রিলিমিনারি প্রশ্নের মানবন্টন ও প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে।
প্রিলিমিনারি প্রশ্নের বিষয়বস্তু ও মানবন্টন
✓বিষয়বস্তু: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য=মানবন্টন: ২০
✓বিষয়বস্তু: ইংলিশ=মানবন্টন: ২০
✓বিষয়বস্তু: সাধারণ জ্ঞান=মানবন্টন: ২০
✓বিষয়বস্তু: গণিত ও মানসিক দক্ষতা=মানবন্টন: ৩০
✓বিষয়বস্তু: কম্পিউটার=মানবন্টন: ১০
লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু ও মানবন্টন
✓বিষয়বস্তু: বাংলা=মানবন্টন: ২৫ থেকে ৩০
✓বিষয়বস্তু: ইংলিশ=মানবন্টন: ১০০ এর বেশি
✓বিষয়বস্তু: গণিত=মান বন্টন: ৫০ থেকে ৭০
আনুষঙ্গিক বিষয়সমূহ এবং ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার উপায়
আপনি যদি ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান তাহলে একজন ব্যাংকার কি কি কাজ করে থাকে? একজন ব্যাংকারের আনুষঙ্গিক কি কি বিষয়ে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন সে বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। তাই এই পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব, বেশ কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় এবং ব্যাংকারদের কাজ ও কর্মপ্রক্রিয়া সম্পর্কে।
মূলত বাংলাদেশ আর আন্তর্জাতিক এই দুই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয় আনুষঙ্গিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত সাধারণ জ্ঞান অংশে। আর সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হলে আপনাকে এ ধারণা রাখতে হবে বেশ কিছু বিষয়ের উপর। যেমন:
- ভৌগলিক বিষয়াবলী
- সীমানা আয়তন
- কৃষিজ বনজ প্রাণিজ ও খনিজ সম্পদ
- নদ-নদী
- শিল্প ও বাণিজ্য
- ইতিহাস ও ঐতিহ্য মুক্তিযুদ্ধ
- অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
- পুরস্কার ও সম্মাননা
- নৃতাত্ত্বিক পরিচয়
- বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
- আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন
- চুক্তি ও সনদ, দেশ ও জাতি সম্পর্কিত নানা বিষয়াবলী।
এবার চলুন জেনে নেই একজন ব্যাংক আর মূলত কি কি কর্ম সম্পাদন করে। ব্যাংকার হিসেবে দুই ধরনের কাজ করতে হয় কেননা ব্যাংকিং খাতে মূলত দুই ধরনের ব্যাংকার রয়েছে। একটি হচ্ছে হাই স্পিড বেঙ্কার অপরটি হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার। হাই স্ট্রিট বেঙ্কার কে রিটেইল বলা হয় অপরদিকে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকারদের কে বলা হয় কর্পোরেট। আপনি যদি হাই স্ট্রিট বেঙ্কার হিসেবে যোগদান করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে মূলত নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে। যথা:
❏ ব্যাংকের অন্যান্য টিমকে (যেমন: ফাইন্যান্স, অর্থনীতি, হিসাবরক্ষণ ইত্যাদি) ট্রেইনিং করানো, ম্যানেজ করানো ও রিক্রুটমেন্টে সাহায্য করা।
❏ ফ্রন্ট লাইনের কাস্টোমার হেল্পে সাহায্য করা।
❏ হেড অফিস থেকে যেসব নতুন পণ্য, সার্ভিস ও প্রসেস যুক্ত করা হয়েছে বা হবে, সেগুলোর দেখাশোনা করা।
কাস্টমারের সমস্যাগুলো চিঠি, মেইল ও সরাসরি সমাধান করা।
❏ কাউন্টারের মনিটরিং করা।
❏ কাস্টমারের চাহিদা সম্পর্কে অবগত হওয়া ও সে অনুযায়ী পণ্য ও সেবার ব্যবস্থা করা।
❏ বিভিন্ন ধরণের অ্যাকাউন্টজনিত সমস্যার সমাধান করা ও সেলসের পেপারওয়ার্ক করা।
❏ নতুন নতুন পণ্য, সেবা ও প্রসেসের সাথে যুক্ত থাকা ও সেগুলো আয়ত্ব করা।
❏ ব্যাংকের জন্য মার্কেটিং প্ল্যান তৈরি করা।
❏ ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চ প্রতিদিন একই সময়ে চালু করা।
❏ সেলস টার্গেট পূর্ণ করা ও বাজেট সংক্রান্ত সমস্যাগুলো ম্যানেজ করা।
এখন চলুন জেনে নিই, একজন ইনভেস্টমেন্ট বা কর্পোরেট ব্যাংকারের কাজগুলো হলো-
❏ বিভিন্ন ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল মডেল তৈরি করা।
❏ ভ্যালু ডেট, ইক্যুইটি মার্জার, অ্যাকুইজিশন এবং ক্যাপিটাল রাইজিং ট্র্যাঞ্জেকশনের ব্যবস্থাপণা করা।
❏ বিভিন্ন ধরণের ভ্যালুয়েশন মেথড তৈরি করা।
❏ কম্পেরেবল কোম্পানি, প্রিসিডেন্ট ও ডিসকাউন্টেড ক্যাশ ফ্লোর (ডিসিএফ) ব্যবস্থাপণা করা।
❏ প্রোডাক্ট অফারিং, প্রাইভেট ইক্যুইটি ট্র্যাঞ্জেকশন, মার্জার ও অ্যাকুইজিশন এবং ভ্যালুয়েশন সম্পর্কে রেকোমেন্ডেশন ডেভেলপ করা।
একজন ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে-:
❏ কাস্টমার সার্ভিসিংয়ে দক্ষ হতে হবে।
❏ সেলস অরিয়েন্টেড হতে হবে।
❏ যোগাযোগ দক্ষতায় পারদর্শী হতে হবে।
❏ যেকোনো পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে চলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
❏ লিডারশীপের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
❏ যেকোনো টিমকে ফাইন্যান্স, অর্থনীতি, ব্যবসা এবং মার্কেটিং সংক্রান্ত বিষয়গুলোর উপর ট্রেইনিং করানোর ও ব্যবস্থাপনা করার দক্ষতা থাকতে হবে।
❏ ব্যাংকিং খাতকে ব্যবসায় পরিণত করার দক্ষতা থাকতে হবে।
❏ ট্র্যাঞ্জেকশন অ্যানালাইসিস করার দক্ষতা থাকতে হবে।
❏ ফাইন্যান্স, অর্থনীতি ও ব্যবসা খাতে ব্যবহৃত সফটওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
❏ ডিজিটাল মার্কেটিং ও অন্ট্রারপ্রিনিয়ারশীপ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
❏ দলগতভাবে কাজ করায় পারদর্শী হতে হবে।
❏ ডিল স্ট্রাকচারিং ও ক্লোজিং প্রিন্সিপ্যাল সম্পর্কে দক্ষ হতে হবে।
❏ যেকোন বিষয়ে রিসার্চ করার দক্ষতার পাশাপাশি কোয়ান্টিটিভ, অ্যানালিটিক্যাল ও মার্কেট ইভেন্টিংয়ের দক্ষতা থাকতে হবে।
❏ মাইক্রোসফট অফিস টুলস ও ভিজ্যুয়াল ব্যাসিক প্রোগ্রামিং ভাষায় যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
❏ ট্র্যাক ওভারল্যাপিং ও ফাইন্যান্সিয়াল মডেল অ্যাসাইনমেন্টের উপর যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
ব্যাংক চাকরির অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা
আপনি যদি নিজেকে একজন ব্যাংকার হিসেবে তুলে ধরতে পারেন বা ব্যাংকে কোন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ করে নিতে পারেন তাহলে বেশ কিছু অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন সে সকল ব্যাংক থেকে। সেগুলো হলো:
- বছরে দুটি আনুষ্ঠানিক ভাতা
- মোটা পরিমাণ বেতন ভাতা
- লভ্যাংশে বোনাস বছরে প্রায় ২-৩ টি
- চাকরিজীবীর ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, এমনকি গৃহঋণ পর্যন্ত পাওয়ার সুযোগ।
শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে আপনি যখন অবসর নিবেন তখন বিভিন্ন প্রকল্প, বেসরকারি কোম্পানি এবং অন্যান্য ব্যাংকে চাকরির সুযোগ পাবেন। এমনকি আপনি বৈদেশিক শাখাতেও চাকরির সুযোগ পেতে পারেন। আর তাছাড়াও ব্যাংক চাকরির ক্ষেত্রে মূলত একজন এমপ্লয়ারের বেতন বৃদ্ধি পায় তার অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষ তার ওপর ভিত্তি করে। এই সবদিক বিবেচনায় ব্যাংক ক্যারিয়ার একটি আদর্শ মাধ্যম।
পরিশেষে: তো পাঠক বন্ধুরা, আশা করি আজকের এই তথ্যবহুল আর্টিকেল আপনাদের ব্যাংক ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পেছনে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবে। যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে এতোটুকু উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট বুক মার্ক করে রাখবেন এবং লেটেস্ট পোস্টগুলো সবার আগে পেতে সাবস্ক্রাইব করবেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ Bank career