ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত | একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে (বিস্তারিত দেখুন)
ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত | একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে (বিস্তারিত দেখুন): বর্তমান সময়ে অনলাইনে টাকা ইনকামের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে ওয়েবসাইট। শুধু তাই নয়, কেউ যদি খুব দ্রুত ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চায় তাদের জন্য প্রয়োজন পড়ে ওয়েবসাইটের। তাই অনেকেই জানতে ইচ্ছুক একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে এবং ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত?
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে আপনাদেরকে স্বাগতম জানাই। আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে খুব সহজভাবে সংক্ষেপে তুলে ধরব ওয়েবসাইট তৈরির খরচ এর বিস্তারিত তথ্য সেই সাথে একটি ওয়েবসাইট তৈরিতে আপনার কি কি প্রয়োজন পড়বে সে সম্পর্কে আরো খুঁটিনাটি বিষয়।
ওয়েবসাইট তৈরি করার কারণ | কেন ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
ওয়েবসাইট তৈরির খরচ জানার পূর্বে এটা জানা প্রয়োজন ওয়েবসাইট মূলত কি কারনে খোলা হয়? একটা ওয়েবসাইট খোলার পেছনে একাধিক কারণ থাকে। আর এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সঠিক ইনফরমেশনের যোগান দেওয়া। এছাড়াও ওয়েবসাইট মূলত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যারা ব্যবসা-বাণিজ্যকে দ্রুত প্রসার ঘটাতে চান অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজের প্রোডাক্ট এর মান বৃদ্ধি করতে চান তাদের জন্য অবশ্যই একটা ব্লগ ওয়েবসাইটের প্রয়োজন পড়বে।
সেইসাথে ইতোমধ্যে আমরা আরেকটি বিষয় জানি যে, আজকাল ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন উপায়ে অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব হচ্ছে। সুতরাং এর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, অনলাইনে ইনকামের জন্য বা নিজের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে অথবা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য একটি ওয়েবসাইট খোলার প্রয়োজন পড়ে। আর এজন্যই ওয়েবসাইট খোলা হয়।
ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত? সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ হয় ওয়েবসাইট তৈরিতে?
বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য আলাদা আলাদা অ্যামাউন্ট এর প্রয়োজন পড়বে। আর আপনি যদি ব্লগিং সম্পর্কে ধারণা রাখেন তাহলে নিশ্চয়ই এই সম্পর্কে কমবেশি আইডিয়া রয়েছে। তবে হ্যাঁ যদি আপনি একদমই নতুন হয়ে থাকেন তাহলে একেবারে সিম্পল সাইট তৈরি করতে চাইলে খরচ পড়বে ১৫০০ টাকা।
অন্যদিকে আপনি যদি উন্নত মানের একটা রঙিন হোস্টিং দিয়ে মানসম্মত প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান সে ক্ষেত্রে খরচ করতে পারেন ৯০০০ টাকার মত। অপরদিকে আরও উন্নত মানের সুপার ফাস্ট শেয়ার হোস্টিং প্লাগিন সে সাথে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে খরচের পরিসীমা দাঁড়াতে পারে ১৫০০০ টাকা।
তবে হ্যাঁ, খরচ আরো কম বেশি হতে পারে। আর এটা জানার জন্য আপনাকে জানতে হবে ওয়েবসাইট তৈরিতে কি কি প্রয়োজন পড়ে এবং কিসে কত টাকা খরচ করতে হয়?
ওয়েবসাইটের ধরনের উপর নির্ভর করে টাকার পরিমাণ
- একটি অনলাইন শপিং বা e-commerce সাইট বানানোর খরচ প্রায় Rs.৪০,০০০/- থেকে Rs.৫০,০০০/-.
- একটি সাধারণ ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে চাচ্ছেন, তাহলে যেকোনো web developer বা designer কে দিয়ে কেবল Rs.১০,০০০/- থেকে Rs.১৫,০০০/- মধ্যেই বানিয়ে নিতে পারবেন।
ওয়েবসাইট তৈরিতে কি কি লাগে?
একটি ওয়েবসাইট তৈরিতে বেশ কয়েকটি জিনিসের প্রয়োজন হয়। সেগুলো হচ্ছে:
- ডোমেইন
- হোস্টিং
- সি এম এস
- থিম
- প্লাগিন্স
- এসএসএল সার্টিফিকেট
ডোমেন কি?
ডোমেইন হল ওয়েবসাইটের নাম অর্থাৎ গুগলকে যদি আপনি একটি গ্রাম চিন্তা করেন তাহলে প্রতিটি ওয়েবসাইট হবে গ্রামের এক একটি বাসস্থান। প্রতিটি ঘরের একটি নাম রয়েছে। যদি আপনি ফেসবুক ডট কম এই নাম google কে বলেন তাহলে গুগল আপনাকে সরাসরি ফেসবুকে নিয়ে যাবে। যদি instagram এর কথা উল্লেখ করেন তাহলে সে আপনাকে সরাসরি ইনস্টাগ্রামে পৌঁছে দেবে।
আর এখানে ফেসবুক ডট কম এবং instagram.com হচ্ছে ডোমেইন। অর্থাৎ ডোমেইন বলতে সেই ওয়েবসাইটের নামকে বোঝানো হয় যেটা আপনি ক্রিয়েট করবেন বা তৈরি করবেন। ডোমে ইন কে ওয়েবসাইটের ওয়েব এড্রেসও বলা হয়ে থাকে। ডোমেইন নেম আপনার পছন্দমত আপনি যে কোন কোম্পানি থেকে কিনতে পারবেন।
কিন্তু হ্যাঁ ডোমেইন নেম অবশ্যই একটি একক নাম। এর মানে হলো কেউ যদি একটি ডোমেইন নাম কিনে নেয় পরবর্তীতে সেটি কেউ কিনে নিতে পারে না যদি না ডোমেইনের মেয়াদ শেষ হয়। যেমন আমাদের এই ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেম mauajaal এর সাথে.net যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ আমাদের ওয়েবসাইটের এড্রেস হচ্ছে mayajaal.net.
হোস্টিং কি?
হোস্টিং মূলত স্টোরিজ হিসেবে কাজ করে। আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ধরনের আর্টিকেল, ইমেজ বা ভিডিও ইত্যাদি কিছু রাখার জন্য আপনার জায়গার দরকার পড়বে। আর এই জায়গাটাই হচ্ছে হোস্টিং। অনেকেই আবার এটিকে মেমোরির সাথে তুলনা করতে পারেন।
তবে হ্যাঁ মাথায় রাখবেন মেমোরি আর হোস্টিং এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আপনি মূলত আপনার মেমোরি আপনি ছাড়া আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না অথচ হোস্টিং এ যে কোন ওয়েবসাইট রাখলে সেটি পৃথিবীর সবাই ব্যবহার করতে পারবে। মানে ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবে। আর ডোমেইনের পর একটি ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে হোস্টিং।
কেননা একজন মানুষ ডোমেইনের মাধ্যমে শুধু ওয়েবসাইটের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে মাত্র। কিন্তু সাইটে যে কনটেন্ট বা আর্টিকেলগুলো পাবলিশ করা হবে সেগুলো রাখার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে হোস্টিং এর। হোস্টিংয়ের মূলত বিভিন্ন প্যাকে বিভিন্ন ধরনের কনফিগারেশন থেকে থাকে।
যেমন ধরুন, কত জিবি স্টোরেজ কত ব্যান্ডউইথ থাকবে ইত্যাদি। তবে আপনার জন্য আমরা সাজেস্ট করবো ভালো মানের হোস্টিং প্যাকেজ নিতে নেম চিপ অথবা বলু হোস্ট/আই পেজ। কেননা এদের সার্ভিসিং কোয়ালিটি অনেক ভালো।
সি এম এস
একটি ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে আরেকটি ব্যবহার্য জিনিস হচ্ছে সিএমএস অর্থাৎ কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নির্ধারণ করে যে একটি সাইটের স্ট্রাকচার কেমন হবে। আপনার যখন ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং জোগাড় করা হয়ে যাবে তখন সি এম এস ইনস্টল করতে হবে। বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে cms রয়েছে তবে এখন সবথেকে জনপ্রিয় cms হল ওয়ার্ডপ্রেস। অর্থাৎ আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস কালেক্ট করতে হবে।
থিম
থিম মূলত একটা সাইটের সৌন্দর্য ও পারফরম্যান্স কে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়। কেননা একটি ওয়েবসাইটের সুন্দর স্ট্রাকচার এবং থিম অডিয়েন্সদের আকৃষ্ট করে। তাই অবশ্যই আপনার উচিত হবে ভালো মানের প্রিমিয়াম থিম ওয়েব সাইটে ব্যবহার করা। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ভালো থিম হলো জেনারেট প্রেস। তবে আপনি চাইলে আপনার পছন্দমত যে কোন থিম বাছাই করে নিতে পারেন।
প্লাগিন্স
আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইট যদি আপনি কাস্টমাইজ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্লাগিন্স এর সাহায্য নিতে হবে। তাই ওয়ার্ডপ্রেস সি এম এস এর সুবিধা হচ্ছে বিভিন্ন প্লাগিন্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমত যে কোন সময় ওয়েবসাইট কাস্টমাইজ করা। অসংখ্য প্লাগিন্স রয়েছে আপনি আপনার রিসার্চ অনুযায়ী যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন।
এসএসএল সার্টিফিকেট
ইতিমধ্যে আমরা প্লাগিন্স সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু এস এস এল বলতে আসলে কি বোঝায়? সি এম এস হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নির্ধারণ করে এমন একটি স্ট্রাকচার। আপুর দিকে এসএস সার্টিফিকেট হচ্ছে যে কোন ইনফরমেশন নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে ডোমেইন এসএসএল সার্টিফিকেট যুক্ত থাকলে দেখবেন যে তা সবুজ রঙের দেখাচ্ছে।
তবে বর্তমানে অধিকাংশ ডোমেইন রেজিস্টাররা ssl সার্টিফিকেট এর অপশন রাখেন। তাই আপনি চাইলে হোস্টিং কেনার সময় এসএসএল সার্টিফিকেট কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের আর্টিকেল। আশা করি আপনারা একটি সাধারন ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হবে এবং সেটা তৈরি করার জন্য কি কি প্রয়োজন পূর্বে আর কত টাকা খরচ হবে এ সম্পর্কে সঠিক ইনস্ট্রাকশন পেয়েছেন। তবুও যদি কোন প্রশ্ন থাকে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানান। ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এতক্ষণ পর্যন্ত ওর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।